জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “যারা এই দেশে গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ, যারা পুলিশ দিয়ে আমাদের ভাইদের গুলি করে হত্যা করেছে—আমরা তাদের বিচার নিশ্চিত করব।”
শনিবার (৫ জুলাই) বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে বগুড়ায় আয়োজিত পথযাত্রা ও পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “নির্বাচনের আগে বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে। কেউ বলছে, বিচার দেরিতে হবে, কিন্তু বিচার শুরু হতেই হবে এবং তা দৃশ্যমান হতে হবে। ভবিষ্যতে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, এই বিচারে কেউ হাত দিতে পারবে না।”

এ সময় তিনি শহীদ পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, “আপনাদের পরিবার যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, তা কোনো কিছু দিয়েই পূরণ করা সম্ভব নয়। আপনাদের প্রিয়জনরা শহীদ হয়েছেন দেশের স্বাধীনতা, মানুষের মুক্তির জন্য। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা রাজপথে নেমেছি।”
সভাস্থলে উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্যরা নাহিদ ইসলামের কথায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “ফেরাউনও চিরকাল ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। স্বৈরশাসনের অবসান হবেই। এবারও সেই স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। আমরা চাই একটি স্বাধীন দেশ, যেখানে স্বৈরতন্ত্র থাকবে না।”
তিনি শহীদ পরিবারগুলোর প্রতি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন এবং আজীবন পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ সম্পর্কে তিনি বলেন, “শহীদ পরিবারগুলোর রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা সংবিধানে সংযুক্ত করতে হবে। সেই লক্ষ্যেই জুলাই ঘোষণাপত্রে সংস্কারের রূপরেখা থাকবে এবং আমরা সারা দেশে পদযাত্রা করছি।”
তিনি আরও বলেন, “বগুড়া গত ১৭ বছর ধরে ফ্যাসিবাদী শাসনের অধীনে বৈষম্যের শিকার হয়েছে। এখানকার মানুষকে চাকরির ক্ষেত্রে বঞ্চিত করা হয়েছে, দেওয়া হয়েছে মিথ্যা মামলা। জুলাই আন্দোলনে বগুড়ায় ১৫ জনের বেশি নিহত ও ৭০০-এর বেশি আহত হয়েছেন। অথচ প্রশাসন এখনো নিরপেক্ষ নয়।”
বগুড়ার প্রশাসনকে উদ্দেশ করে নাহিদ ইসলাম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন। কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করবেন না।”
পথসভা শুরুর আগে বগুড়ার পর্যটন মোটেলে জুলাই আন্দোলনের শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এনসিপির নেতাকর্মীরা।